ত্বক চর্চায় চারকোল জনপ্রিয় উপকরণ। চারকোল মুখের মাস্ক, ফেসওয়াশ এমনকি টুথপেস্ট হিসেবে ব্যবহার হয়। চারকোলের জনপ্রিয়তার কারণ হলো এটা অতি দ্রুত শোষণ করে। ত্বকের টক্সিন এবং ব্যাকটেরিয়াও দ্রুত শোষণ করে নেয়। অন্য যেকোনো উপাদানের চেয়ে দুইশো ভাগ বেশি তেল শোষণ করে নেয়। জানালেন অ্যারোমা থেরাপিস্ট আমিনা হক
১ ত্বকের গভীর থেকে ময়লা পরিষ্কার করে: চারকোলের রাসায়নিক গঠনে অসংখ্য ছিদ্র থাকার কারণে অতিদ্রুত ত্বকের ময়লা ও সূক্ষ্ম ছিদ্র পরিষ্কার করে ফেলে। মিশ্র ও তৈলাক্ত ত্বকের ক্ষেত্রে চারকোল খুব কার্যকর উপাদান। কারণ ত্বকের অতিরিক্ত তেল শুষে নেয় এবং বন্ধ লোমকূপের মুখ খুলে দেয়।
২. ত্বক সতেজ করে: অন্যান্য কঠোর স্ক্রাবের মতো নয়, চারকোলের সূক্ষ্ম গঠন মাইক্রোটিয়ার না করে ত্বককে আলতোভাবে এক্সফোলিয়েট করে।
৩. তৈলাক্ত চুলের জন্য: চারকোল অতি দ্রুত স্পঞ্জের মতো তৈলাক্ত চুল থেকে তেল চুষে নেয়। শ্যাম্পু করার সময় না থাকলে আপনার তৈলাক্ত চুল ঝরঝরে করতে শিয়া ময়েশ্চার এবং ড্রাইবারের মতো ব্র্যান্ডের অ্যাক্টিভেটেড চারকোল প্রথমে স্প্রে করে নিন। এরপর চুল আঁচড়াতে পারেন। দেখবেন চুল একদম ঝরঝরে হয়ে গেছে।
৪. দাঁত সাদা করতে: দাঁত সাদা করতে ব্যয়বহুল চিকিৎসা না করে চারকোল পাউডার ব্যবহার করে দ্রুত দাঁত সাদা করতে পারেন। চারকোল পাউডার অতি দ্রুত দাঁতের উপরিভাগের দাগ তুলে ফেলে। আপনি চাইলে চারকোল রয়েছে এমন টুথপেস্ট কিনতে পারেন। আবার ব্রাশ করার আগে আপনার ব্যবহৃত টুথপেস্টে এক চিমটি চারকোল পাউডার মিশিয়ে নিন। তবে প্রতিদিন চারকোল ব্যবহার করবেন না। কারণ এটি আপনার দাঁতের এনামেল ক্ষতিগ্রস্ত করে।
৫. ব্রণ দূর করে: চারকোল অতিরিক্ত তেল অপসারণ করে চুল যেমন ঝরঝরে করে দেয় তেমনি ত্বকের অতিরিক্ত তেলও দূর করে ব্রণ আটকায়। যাদের ত্বক অতি তৈলাক্ত এবং পরিষ্কার করার কিছুক্ষণের মধ্যে আবার তৈলাক্ত হয়ে পরে তারা এই সমস্যা সমাধানে চারকোল সমৃদ্ধ ফেসওয়াশ বেছে নিতে পারেন। এর ফলে ত্বক সতেজ হবে। এছাড়া সপ্তাহে দুই দিন চারকোলের মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের দাগও চলে যাবে।
৬. খুশকি ও মাথার ত্বকের চুলকানি: অ্যাক্টিভেইটেড চারকোল শ্যাম্পুর সঙ্গে মিশিয়ে বা সাধারণ ভাবে মাথার ত্বকে ব্যবহার করা যায়। এতে ত্বকের বাড়তি তেল দূর হয়। এছাড়াও খুশকি দূর করতেও সাহায্য করে।
৭. ফেস স্ক্রাব— একটি প্লাস্টিকের পাত্রে ২ চা চামচ জোজোবা অয়েল-এর সঙ্গে সামান্য অ্যাক্টিভেটেড চারকোল পাউডার মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট রাখুন। তারপর হালকা গরম জলে মুখ পরিষ্কার করে ধুয়ে নিন।
৮. ফেস প্যাক— একটা প্লাস্টিকের বোলে ১ চা চামচ অ্যাক্টিভেটেড চারকোল পাউডারের সঙ্গে ৩ চা চামচ অ্যালোভেরা জেল এবং ২-৩ ফোঁটা টি-ট্রি অয়েল মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
৯. পিল অফ মাস্ক— প্লাস্টিকের পাত্রে ২ চা চামচ অ্যাক্টিভেটেড চারকোল পাউডারের সঙ্গে বেশ খানিকটা ফেভিকল ও সামান্য জল মিশিয়ে মসৃণ পেস্ট তৈরি করে নিন। পরিষ্কার ও শুকনো মুখে পেস্টটি ভালো করে চারিয়ে দিন চোখ, মুখ, ভুরু বাঁচিয়ে। সম্পূর্ণ শুকিয়ে গেলে পিল করে নিন। যেখানে থেকে ভিজে তোয়ালে দিয়ে আস্তে করে মুছে মুখ পরিষ্কার করে নিন।
সাবধানতা— চারকোল ফুসফুসের জন্যে ক্ষতিকারক। চোখ, নাক, মুখ বাঁচিয়ে। শ্বাসনালিতে যাতে প্রবেশ না করে।
Login to ask a question