কস্তুরী হলুদ
প্রাচীন আর্য়ূবেদে রূপচর্চায় জন্য সবচেয়ে ব্যবহৃত উপাদান গুলোর মধ্যে কস্তুরী হলুদ অন্যতম। কস্তুরী হলুদ দেখতে অনেকটা কাঁচা হলুদের মতো। তবে বাইরের আবরণ আদার মতো আর ভিতরের হলুদের রং হালকা হয়ে থাকে। সাধারনত দক্ষিণ এশিয়ার দেশ গুলোতে এই হলুদ জন্মায়। কস্তুরী হলুদের ব্যবহার অনেক। স্বাস্থ্য উপকারিতায় ও রুপচর্চায় এই হলুূূদ বেশ ব্যবহার করা হয়। তবে রুপচর্চায় এর ভূমিকা অতুলনীয়।
চলুন তবে জেনে নেয়া যাক রুপচর্চায় কস্তুরি হলুদের ব্যবহার
১.মুখের অবাঞ্ছিত লোম পরিষ্কার করে: কস্তুরী হলুদ বেশ কার্যকরি ত্বকের এই সমস্যাটি দূর করার জন্য। অনেক সময় হরমোন জনিত সমস্যার জন্য প্রায়শ মেয়েরা এই সমস্যাটি ভোগ করে থাকেন। কস্তুরী হলুদের নিয়মিত ফেসপ্যাক এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিবে। তবে এই ফেসপ্যাকে অন্যান্য সংমিশ্রণ যুক্ত করতে হবে। শুষ্ক ত্বক হলে কস্তুরী হলুদ সাথে কাঁচা দূধ এবং বেসন দিয়ে পেস্ট বানাতে পারেন। তৈলাক্ত ত্বক হলে দুধের পরিবর্তে জায়গায় টক দই ব্যবহার করতে পারেন। আর সেনসেটিভ ত্বক হলে মধু (royal honey) ব্যবহার করতে পারেন।
২.ত্বকের অসামঞ্জস্য রঙ দূর করে: রৌদে চলাচলের সময় অনেকটা নিজের অজান্তেই আমরা এর শিকার হই। সাথে তো রয়েছে ত্বকের বিভিন্ন রকম সমস্যা। কস্তুরি হলুদ আপনার এই সমস্যা দূর করবে। প্রতিদিন রাতে শোবার আগে একচামচ কস্তুরী হলুদ সামান্য দুধ বা টক দই মিশিয়ে ১০ মিনিট রেখে পরিষ্কার পানিতে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
৩.ত্বকের ব্রন সমস্যা দূর করতে: বেশির ভাগ মেয়েদের সাধারণ একটি সমস্যা হচ্ছে ব্রন। এই সমস্যা দূর করার জন্য কস্তুরী হলুদ সবচেয়ে কার্যকরি। কারণ কস্তুরী হলুদে রয়েছে এন্টিইনফ্লামেটরি প্রোপার্টিজ যা ত্বকের ব্রনের সমস্যা দূর করে। কস্তুরী হলুদের সাথে তুলসি পাতার রস ও মধু মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে সপ্তাহে ৩ দিন ব্যবহার করুন।
৪. ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর করে: ত্বকের তেল তেল ভাব বেশ সমস্যা তৈরির কারণ। যেমনঃ ব্লাকহেডস, ব্রন, পিগমেন্টেশন সহ আরও অনেক। কস্তুরী হলুূদ আপনার এই সমস্যাটি সমাধান করবে। ১ চামচ চন্দ্র গুড়া এবং ৩ চা চামচ কমলার জুস সাথে ১ চা চামচ কস্তুরী হলুদ গুড়া মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। ১৫ মিনিট রেখে পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
৫. ত্বকের তারুণ্য ফিরে পেতে: কস্তুরী হলুদ ত্বকের বলিরেখা দূর করে। কারন এতে থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের অক্সিজেন সরবরাহ বৃদ্ধি করে। ফলে ত্বকের সেল গুলো হয়ে উঠে উজ্জ্বল। নিয়মিত কস্তুরী হলুদ পেস্ট ব্যবহার করে দিলে কয়েক মাসের মধ্যে আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়।
৬.ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে: কস্তুরি হলুদের মধ্যে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান রয়েছে। যদি নিয়মিত কস্তুরি হলুদের ফেসপ্যাক ব্যবহার করেন, তাহলে ত্বকের যাবতীয় দাগছোপ দূর হয়ে যাবে এবং ত্বক উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।
তবে এখানে একটু বলে রাখা ভালো কখনই কস্তুরী হলুদ খালি ব্যবহার করবেন না। মসুর ডাল কিংবা মুলতানি মাটি মিশিয়ে ব্যবহার করুন। আর আপনার ত্বক যদি খুব বেশি সেনসিটিভ হয়ে থাকে তবে সপ্তাহের ১ বারের বেশি কস্তুরী হলুদের পেস্ট ব্যবহার না করাই ভালো।
সুতরাং একটা কথাই বলা যায়, প্রাচীন কাল থেকে এখনও পর্যন্ত কস্তুরী হলুদ রুপচর্চায় অনন্য।
Login to ask a question